##সম অন্তরালে###


আমার ইলিশ আছে।

স্বাদে-গন্ধে কেমন (?)

-জেনে নিয়ো থাই’দের কাছে।

পারস্পরিক বিশ্বাসকে সাক্ষী রেখে কথা দিচ্ছি,

-কড়া নজর রাখবো, যাতে কেউ না-ঠকি;

ইলিশের বিনিময়ে চাই,-এমন কিছু,-

--এমন কিছু চাই,--যা’ আমার নাই।

ভেবে দ্যাখো,--নিজ বুদ্ধিতে ভেবে দ্যাখো,-

--অন্যের বুদ্ধি ধার ক’রে ভেবো না ;

-ভেবে দ্যাখো, দেওয়া-নেওয়ার এই প্রস্তাবনা

মানতে পার কি না --।

‘মানা না-মানা নিজের কাছে,’-

--এ জ্ঞানটুকু আমাদের আছে।

‘না-পোষালে কেউ যে

মানে না বা মন-থেকে মানে না,’--

-এ সত্যটাও আমাদের নয় কারো অজানা।

মানো বা না-মানো,-অভয় দিচ্ছি,

--আঘাত করবো না,-

তবে,-অবৈধ আঘাতের বিনিময়ে প্রতিঘাত পেলে

বন্ধুকে যেন অপরাধী বোলো না ॥

আবারো বলছি, ভেবে দ্যাখো,--

-দেওয়া-নেওয়ার প্রস্তাবনা মানতে পারো কি না।

তোমার আঙ্গুর আমি খাবো;

-তার আগে আমার আমটা খেয়ে দেখো,-

--ফেলে দিয়ো যদি ভালো না-লাগে ॥

তোমার খেজুর-কিসমিস-নাসপাতি-আপেল

আর আমার কাঁঠাল-কমলা-কুল-পেঁপে-বেল,

পেয়ারা-আনারস-কলা-আমলকি...

--বিনিময়ে রাজি আছো কি?


তোমার নায়াগ্রাতে আমি যাবো;

-তার আগে তুমি এসো আমার কুয়াকাটায়,

-ভালো না-লাগলে গোপন কোরো না,

-ব’লে দিয়ো নির্দ্বিধায় ॥

ক্যাঙ্গারু দেখতে আমার ভালোই লাগে;

-আমার ‘রয়েল-বেঙ্গল’-কে দেখে যেয়ো;--

--মনে হয় ভালো লাগবে তোমারও -।


তোমাদেরগুলো দেখাতে চাচ্ছো?

দেখবো না কেন!?

-সময় পাই যদি,--নিশ্চয়ই যাবো,

-তোমার পিরামিডগুলো দেখে আসবো।

--তুমিও এসো পাহাড়পুরে,

-এসো তোমরা মহাস্থানগড়ে,

--সময়ের সাক্ষীগুলো দেখাবো এবং

দেখবো ঘুরে ফিরে ॥


তোমার ভিসা দেখতে চাই না,-

-শুধু একটা পরিচয়পত্র সঙ্গে ক’রে এনো;

-প্রয়োজনে ঠিকানাটা পাওয়া যায় যেন।

-দীর্ঘতম সৈকত দেখতে এলে

সঙ্গে তোমার জুটিকে আনতে ভুলো না।

--এক বিশাল (!)সৌন্দর্যের মাঝে

হারিয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা-(!),

--একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না ॥


যদি চাও,-ধরো এ প্রসারিত হাতখানা;

এখানে পাবে না মিথ্যাচার,-পাবে না প্রবঞ্চনা;-

এসো অঙ্গিকারে,--

-"কেউ কাউকে করুণা করবো না,--

--যে যার মতো থাকবো;

-পরস্পরকে প্রতিযোগী ভাববো

-পরস্পরকে সহযোগী ভাববো।"


মিথ্যা অহঙ্কারের মুখোশ খুলে গেছে -।

যদি,--আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা ক’রে

কখনো বন্ধুত্বের অবমাননা করি,

--ক্ষমা কোরো না;

-অমন বন্ধুর মুখে থুতু দিতে কার্পণ্য কোরো না ॥


তোমরা আমন্ত্রিত,

--সকলেই আমন্ত্রিত আমার সাভারে;

-সময়ের শ্রেষ্ঠ সৌধটি দেখতে চাইলে এসো,

---নির্ভয়ে এসো বারে বারে ॥


প্রত্যেক মানুষের প্রতি,--

সময়ের কাছ থেকে পাওয়া,--

-সময়ের এই খোলা চিঠি অথবা সংবাদ,

যা’ কি না সিংহভাগ মানুষের জন্য সুসংবাদ

এবং নিঃসন্দেহে সত্য সুন্দর হিসেবে

ধ’রে নিতে পারো।


-দু’কান খুলে শোনো,-

ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্রীয়, আন্তর্জাতিক

এবং সর্বোপরি প্রত্যেক মানুষের আত্মিক ক্ষেত্র হ’তে

-‘মনিব ক্রীতদাস মোড়ল তাবেদার ’-চক্রের,

-সংক্ষেপে,-‘ম-ক্রী-মো-তা’-চক্রের আধিপত্য

বিতাড়িত, বিক্ষিপ্ত, -এখন তা’ ইতিহাসের পাতায়;

--আধিপত্যবাদ এখন মৃত এবং

আবর্জনার স্তুপে নিক্ষিপ্ত।

--কে কা’কে রক্ষা করবে!?

--সকলেই যে নিরুপায়!

একটু ভাবলেই বোঝা যায়,-

-সকলেই ব্যস্ত এখন আত্মরক্ষায়।

যেকোনো একচেটিয়া বাণিজ্যের ভিত এখন নড়বড়ে।

তারাই লাভবান এখানে,-দু’হাজার উত্তর পৃথিবীতে,

--যারা বিনিময়ে বিশ্বাস করে ॥


(মনোপলি (monopoly)পরিত্যক্ত,

-পলিমনো (polymono)জাগ্রত মানুষের মনে।)


দু’হাজারোত্তর পৃথিবী, --

-বুদ্ধিবৃত্তির ক্রীতদাসত্ব মুক্ত পৃথিবী;

-স্বসত্যকে সৎসাহসে সরাসরি প্রকাশের পৃথিবী;

-প্রতারণা প্রবঞ্চনামুক্ত পৃথিবী ॥


দু’হাজার উত্তর পৃথিবী,

-নিজের ফাঁদে নিজে পড়ার পৃথিবী ॥

দু’হাজারোত্তর জনপদ, -এই পৃথিবী,

-নিজের এবং অন্যের যথাযোগ্য মূল্যায়নের পৃথিবী;

-যোগ্যতার যথাযথ মূল্যায়নের পৃথিবী ॥


দু’হাজার উত্তর পৃথিবীতে দু’টো সম্ভাবনা,-

-‘প্রতারণাময় উচ্চারণ’-এর সীমাবদ্ধতা থেকে

মুক্তি পেয়ে ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ ধারণাটি

সার্বজনীন ভাবে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে

প্রকাশ পেতে পারে (!)--


--তা’ যদি না-হয়,-অন্যটি হ’চ্ছে,

(!!) প্রকৃত নিরপেক্ষ অভিভাবকত্ব নিয়ে

একাধিক সমমতৈক্যের জোট,

-সহযোগিতা এবং প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে

গড়ে উঠতে পারে,-যা’ কিনা

গণমনস্তাত্ত্বিক এবং ভৌগোলিক অবস্থান সাপেক্ষে

আলাদা বা মিশ্র ভাবে সহনশীল মাত্রার হবে,

-নিরপেক্ষ মনে হবে সবার কাছে।

সময় বা কাল চক্রে

‘এশিয়া সংঘ’ জাতীয় একটা ঐক্যজোট,

--স্বমহিমায় যা’ সম্ভাবনাময় (!)-যদি গড়ে ওঠে,--

-সেখানে আধিপত্যবাদের স্থান হবে না এবং

হয়তো,-তার প্রধান কার্যালয় দেখা যাবে সাভারে (!!)

--মুক্ত নির্বাচনে হিরোসিমা, হংকং

অথবা শ্রীনগরেও হ’তে পারে,-

--যেখানে সম্মানিত হবে ভোট এবং ভোট;

-পরিত্যাজ্য ঘৃণ্য ‘ভেটো’ পদ্ধতি নিক্ষিপ্ত হবে,

--জঞ্জালপূর্ণ সেই আস্তাকুড়ে,

--যা’ সর্বদাই ছন্দহীনভাবে দ্বন্দ্বময় ॥


( যখনই ‘আধিপত্যবাদী মন’-টার তাবেদারি করি,

অথবা যখনি ধারকরা বুদ্ধির মোসাহেবি করি,

--ক্রীতদাস আমি মনে মনে,

--অতিচালাক ভাবি নিজেকে,-তখনি,-

-সার্বজনীন স্বার্থ দেখলেই জ্ব’লে পুড়ে মরি ॥

যতই দাপাদাপি করি,-মানি চাই না-মানি,

-সকল সম্ভাবনার একটাই ঘটেছে এবং ঘটবে,

-একটাই ঘটছে, -যা’স্থির এবং স্বতঃসিদ্ধ।

যা’ ঘটবার তা’ ঘটবে,-এটাই সুনিশ্চিত।)


অভিযোগহীন ভাবনা এবং অপেক্ষা সম্বল;-

-আনন্দভরে দেখে যাবো শেষ ফলাফল ॥

* এখানে আমার বুকে ‘রাষ্ট্রভাষার’ দাবিতে

সাহসী মানুষের পবিত্র রক্ত ঝরেছিলো,

--ফলাফলে,-

‘বিশ্বমাতৃভাষা’ সম্মানিত হয়েছে;

আমার অপ্রকাশমান অহংকার আমাকে

---আশাবাদী করেছে ॥

#################
-রঙ্গপুর / দু’হাজার ফেব্রুয়ারি
#########

বি:দ্র: ‘সম-অন্তরালে’ শিরোনামের এই পত্রখানা কোনো ‘জাতীয় পত্রিকা’য় স্থান না-পেলে পরে বিলিপত্র হিসেবে বিলি হয়েছে গোটাদেশব্যাপী। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘দায়মুক্তি’ শিরোনামে যে বিলিপত্র সংকলনটি বের করা হলো
স্ব-উদ্যোগে, তাতেও ছিল এই পত্রটি। সম্মানিত রুচিশীল সুশীল পাঠকসমাজের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়ে শাদামাটা মলাটের ‘দায়মুক্তি’ বইমেলা ঘুরে এলো এবং বিনামূল্যে বিলি হলো সম-অন্তরাল-এর মতো যত্রতত্র।